মানসিক রোগে করণীয়

লাইফস্টাইল ডেস্ক :

মানসিক রোগী বললেই সাধারণত রাস্তার পাশের উশকো-খুশকো চুলের ছেঁড়া কাপড় পরা কিছু মানুষের চেহারা চিন্তায় আসে। অথবা চোখের সামনে মানসিক হাসপাতালের চিল্লাচিল্লি করা বা হাসাহাসি করা লোকদের চেহারা ভেসে উঠে। শুধুমাত্র এরাই কি মানসিক রোগী? না। প্রকৃত বাস্তবতা একটু ভিন্ন কথা বলে। এ কারনে প্রকৃত অর্থে কারা মানসিক রোগী তা জানা উচিত।

আরো পড়ুন : মানসিক রোগে করণীয়

মানসিক রোগ কি?
মানসিক রোগ হলো মস্তিষ্কের এক ধরনের রোগ। বিশেষজ্ঞদের মতে, মানসিক রোগ হচ্ছে একজন ব্যক্তির সুস্থভাবে চিন্তা করতে, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং সঠিকভাবে আচরণ করতে না পারা। মানসিক রোগ দুই ধরনের হতে পারে:

১. মৃদু ধরনের মানসিক রোগ
২. তীব্র ধরনের মানসিক রোগ

১. মৃদু ধরনের মানসিক রোগ: এক্ষেত্রে জীবনের স্বাভাবিক অনুভূতিগুলো (দুঃখবোধ, দুশ্চিন্তা ইত্যাদি) প্রকট আকার ধারণ করে৷

এ ক্ষেত্রে যেসব লক্ষণগুলো দেখা যায় তা হচ্ছে: অহেতুক মানসিক অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা-ভয়ভীতি, মাথাব্যথা, মাথাঘোরা, খিঁচুনি, শ্বাসকষ্ট, বুক ধরফর করা, একই চিন্তা বা কাজ বারবার করা (শুচিবাই), মানসিক অবসাদ, বিষন্নতা, অশান্তি, বিরক্তি, অসহায়বোধ, কাজে মন না বসা, স্মরণশক্তি কমে যাওয়া, অনিদ্রা, ক্ষুধামন্দা, আত্মহত্যার করার প্রবণতা বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি৷

২. তীব্র ধরনের মানসিক রোগ: এক্ষেত্রে আচার আচরণ কথাবার্তা স্পষ্টভাবে অস্বাভাবিক হয় ফলে আশেপাশের মানুষরা এটা বুঝতে পারে। এসময় যেসব লক্ষণগুলো দেখা যায় তা হচ্ছে: অহেতুক মারামারি, ভাঙচুর করা, গভীর রাতে বাড়ির বাইরে চলে যাওয়া, আবোল-তাবোল বলা, সন্দেহ প্রবণতা, একা একা হাসা ও কথা বলা, নিজেকে বড় মনে করা, বেশি বেশি খরচ করা, স্বাভাবিক বিচারবুদ্ধি লোপ পাওয়া, ঠিকমতো ঘুম না হওয়া, খাওয়া-দাওয়া ঠিকমতো না করা।

gif maker

মানসিক রোগ থেকে বেঁচে থাকার উপায়:
তাহলে বুঝা গেলো আমরা যাদেরকে মানসিক রোগী ভাবি তারা ছাড়াও আরো অনেকে মানসিক রোগে আক্রান্ত। মানসিক রোগ থেকে বাঁচার জন্য প্রথমে প্রয়োজন দৃঢ় ইচ্ছা শক্তি এবং ভালোভাবে বেঁচে থাকার অদম্য ইচ্ছা। নিম্নলিখিত কিছু পরামর্শ মানসিক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কার্যকরী হতে পারে-

১। দক্ষ মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করান
২। ভারসাম্যপূর্ণ ও স্থায়ী দৈনন্দিন তালিকা মেনে চলুন
৩। কাজে ব্যস্ত থাকুন
৪। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমান
৫। বিশ্রাম ও আরাম করার জন্য সময় নিন
৬। পুষ্টিকর এবং সুষম খাবার গ্রহণ করুন
৭। ধূমপান ও মদ্যপান সহ যাবতীয় নেশা জাতীয় দ্রব্য থেকে দূরে থাকুন
৮। নিজেকে সবার থেকে আলাদা করা থেকে বিরত থাকুন
৯। ধর্মীয় কাজে সময় দিন
১০। পর্নোগ্রাফি দেখা পরিহার করুন

প্রকৃতপক্ষে মানসিক রোগ কী?

দীর্ঘদিন স্বাভাবিক আচার-আচরণ পরিপন্থী, অস্বাভাবিক জীবনযাপনই মানসিক রোগ। বাংলাদেশের প্রায় ৫ থেকে ৯ ভাগ লোক কোনো না কোনো মানসিক রোগে আক্রান্ত। মানসিক রোগীদের সঠিক চিকিৎসা না হলে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

মানসিক রোগের কারণ

১. পারিবারিক অশান্তি, অবহেলা, অনিশ্চয়তা।

২. ব্যক্তিগত দুশ্চিন্তা, হতাশা, ভয়।

৩. সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা।

৪. বংশগত কারণ।

৫. শারীরিক বিভিন্ন রোগের কারণে মানসিক রোগ হতে পারে।

৬. বিভিন্ন ওষুধের দীর্ঘমেয়াদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে মানসিক রোগ হতে পারে।

মানসিক রোগের লক্ষণ

১. আবেগের অস্বাভাবিকতা।

২. অতি উত্তেজনা।

৩. মনের ভেতর সব সময় অশান্তি, অবসাদ।

gif maker

৪. সব সময় মন খারাপ থাকা।

৫. স্বাভাবিক বিচার-বিবেচনা লোপ পাওয়া।

৬. রাতে স্বাভাবিকভাবে কম ঘুম হওয়া।

৭. সন্দেহ প্রবণতা।

৮. অহেতুক ভয় পাওয়া।

৯. শুচিবায়ু।

১০. কারণে-অকারণে মূর্ছা যাওয়া।

১১. একা একা থাকা, একা একা কথা বলা, হাসা ইত্যাদি।

মানসিক রোগে প্রাথমিকভাবে করণীয়

১. লজ্জা না পেয়ে, সামাজিক ‘স্টিগমা’ নিয়মিতভাবে মানসিক রোগের ডাক্তার দেখান এবং ডাক্তারের ফলোআপে থাকুন।

২. কাজে ব্যস্ত থাকুন।

৩. পর্যাপ্ত ঘুমান।

৪. নিয়মিত বিশ্রাম নিন।

৫. নিয়মিত পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খান।

৬. যেকোনো বদ অভ্যাস ও নেশা থেকে দূরে থাকুন।

৭. সব সময় ইতিবাচক চিন্তা করার চেষ্টা করুন।

৮. আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন।

৯. পছন্দের মানুষ, কাছের বন্ধুদের সঙ্গে মিশুন।

১০. নিয়মিত ধ্যান করুন, ধর্মীয় আচার-আচরণ পালন করুন।

মানসিক রোগ ও এর চিকিৎসার প্রতি ভ্রান্ত ধারণা ও নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত আমাদের দেশেও বিদ্যমান। পঞ্চাশ দশকের শুরুর দিকে যখন মানসিক রোগ চিকিৎসার আধুনিক ঔষধ আবিষ্ককৃত হয় তখন মানসিক রোগ চিকিৎসায় বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনা তৈরি হয়। কিন্তু এ উৎসাহ বেশীদিন স্থায়ী হয়নি জনগণের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে। প্রায় একশ বছর আগে ক্লিফোর্ড বিয়ার মানসিক রোগ চিকিৎসার পথে প্রধান অন্তরায় হিসেবে যে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলেছিলেন একবিংশ শতাব্দীতে এসেও বিজ্ঞানীরা একই কথা বলছেন। কালের পরিক্রমায় মানসিক রোগ চিকিৎসার অগ্রগতি হলেও জনগণের দৃষ্টিভঙ্গির কাঙ্খিত পরিবর্তন সাধিত হয়নি। অথচ মানসিক রোগ চিকিৎসার বর্তমান অগ্রগতি এক কথায় বিস্ময়কর । আমাদের দেশে চিকিৎসা বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার তুলনায় মানসিক রোগ চিকিৎসায় উন্নতি বেশি যুগোপযোগী। উন্নত দেশে মানসিক রোগচিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধের শতকরা ৯৯ ভাগ এদেশে তৈরি হয় যা মনোচিকিৎসকগণ সাফল্যের সাথে প্রয়োগ করছেন । তারপরও এ সব অতি প্রয়োজনীয় ঔষধ সম্পর্কে জনগণ, এমনকি চিকিৎসক ও মনোবিদদের রয়েছে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, ভ্রান্ত ধারণা ও কুসংস্কার। এ বিষয়টি মানসিক রোগ চিকিৎসার অন্যতম অন্তরায়।

দৃষ্টিভঙ্গি একটি সমষ্টিগত ব্যাপার যা কোন বিষয়, ব্যক্তি ও ঘটনার ইতিবাচক অথবা নেতিবাচক ভাবমূর্তি উপস্থাপন করে। আর নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি কোন একটি জনগোষ্ঠীর প্রতি সাধারণ জণগণের বৈষম্যমূলক আচরণকে উৎসাহিত করে যার ফলে উক্ত জনগোষ্ঠী সমাজে বৈষম্যের শিকার হয়, মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। মানসিক রোগ ও এর চিকিৎসার প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে এভাবে মানসিকরোগী ও তার পরিবারও মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিষয়টি লিঙ্গ বৈষম্য, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির প্রতি বৈষম্যসহ অন্যান্য সামাজিক বৈষম্যের সাথে তুলনীয়। সামাজিক এ বৈষম্য ব্যক্তিকে আরও সমাজবিচ্ছিন্ন করে ফেলে যে কারণে ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যহত হয়।

ঔষধ মানসিক রোগ চিকিৎসার একটি অপরিহার্য অংশ। ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে ব্যবহৃত ঔষধের মত মানসিক রোগ চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধও নির্ধারিত বৈজ্ঞানিক গবেষণায় (Clinical Trial) মানবদেহের জন্য কতটুকু নিরাপদ ও কার্যকর তা পরীক্ষার পর বাজারজাতকরণের অনুমতি প্রদান করা হয়। জার্মানীতে এক গবেষণায় দেখা গেছে, হৃদরোগ চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধের চেয়ে মানসিক রোগের ঔষধ জনগণের নিকট কম গ্রহণযোগ্য। এর অন্যতম কারণ ছিল মানসিক রোগের ঔষধ সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা। শতকরা ৪২ জন মনে করেন মানসিক রোগের ঔষধ সেবনে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারানোর সম্ভবনা রয়েছে; হৃদরোগের ঔষধের ক্ষেত্রে এ হার মাত্র ৮ ভাগ। মানসিক রোগ চিকিৎসায় উপসর্গের উপশমের পর রোগী ও তার আত্মীয়স্বজনের প্রশ্ন “ আর কতদিন এ ঔষধ খেতে হবে?” কিন্তু ডায়বেটিস ও হৃদরোগ চিকিৎসায় যেখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আজীবন ঔষধ খেতে হয় সেখানে চিকিৎসকদের এ ধরনের প্রশ্ন শুনতে হয় কালেভদ্রে। অথচ উভয় ঔষধের কিছু পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া রয়েছে। আসলে মূল সমস্যা দৃষ্টিভঙ্গির; মানসিক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধের নয়।

আরও কিছু ভ্রান্ত ধারণার উদাহারণ দিলে বিষয়টি পরিস্কার হবে। সাধারণ জনগণের বেশিরভাগের ধারণা মানসিক রোগ চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধগুলি শুধুমাত্র ঘুমের জন্য ও উপসর্গ দূর করার কাজে লাগে, প্রকৃত সমস্যার সমাধান করতে পারেনা। অনেকের ধারণা এসব ঔষধে আসক্তি তৈরি হয়। কিন্তু শুধুমাত্র বেনজোডায়াজেপিন গ্রুপের ঔষধ (যা উদ্বেগ ও অনিদ্রা সমস্যার জন্য ব্যবহার করা হয়) দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহার করলে আসক্তির সমস্যা দেখা যায়। বিষন্নতারোধী ও জটিল মানসিক রোগ চিকিৎসায় ব্যবহৃত অন্যান্য ঔষধে এ ধরনের সমস্যার কোন বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণ নেই। জনগণের মধ্যে অন্যসব মানসিক রোগের ঔষধের প্রতি এ ভ্রান্ত ধারণার সরলীকরণ করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া দীর্ঘদীন এ ধরণের ঔষধ (বেনজোডায়াজেপিন) সেবন করলে কিংবা চিকিৎসকের অজ্ঞতার কারণে দীর্ঘ দিন ব্যবহারে এ সমস্যা নিয়ে রোগীরা মনোচিকিৎসক ও মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের (Psychitrist) শরণাপন্ন হন, তখন বিষন্নতারোধী ঔষধ দিয়েই এ রোগের চিকিৎসা করা হয় !

আমার পরিচিত কয়েকজন চিকিৎসকের কথা জানি যারা নিজেদের ও তাদের সন্তানদের মানসিক রোগ চিকিৎসায় ঔষধ সেবন করতে চাননা শুধুমাত্র নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে। তারা মনোচিকিৎসকের কাছে ঔষধ ব্যতীত সাইকোথেরাপী ও কাউন্সিলিং (মনোসামাজিক চিকিৎসা) দাবী করেন। কিন্তু তাদের জানা থাকা প্রয়োজন, মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের মূল দায়িত্ব মানসিক রোগ নির্ণয় করে প্রয়োজন অনুযায়ী ঔষধসহ, মনোসামাজিক চিকিৎসা ও অন্যান্য পরামর্শ প্রদান এবং প্রযোজন অনুসারে সাইকোথেরাপীর জন্য মনোবিদের (Psychologist) নিকট রেফার করা । অন্য চিকিৎসকদের যখন এ অবস্থা তখন জনগনের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা হতাশাজনক মনে হতে পারে। আবার, বেশীরভাগ জনগণ ও চিকিৎসক মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ও মনোবিদের পার্থক্য বোঝেন না । এজন্য টিভি টকশোতে প্রায়ই মনোবিদকে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় । অনুষ্ঠানের উপস্থাপক এদেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় ও উচ্চশিক্ষিত অভিনেত্রীর যখন এ অবস্থা তখন অন্যদের অবস্থা কী রকম হতে পারে তা অনুমান করা সহজ। সবচেয়ে দুঃখজনক এ ধরনের অনুষ্ঠানে মানসিক রোগের ঔষধ (বিষন্নতারোধী) সম্পর্কে যে ধরনের নেতিবাচক, বিভ্রান্তিকর ও অবৈজ্ঞানিক তথ্য পরিবেশন করা হয় তা অজ্ঞানতার অপরাধে দুষ্ট। এতে ঔষধ সম্পর্কে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি আরও বাড়ে যা মানসিক রোগচিকিৎসার প্রধান বাধা। কোন ধরনের মানসিক রোগে কোন ধরনের চিকিৎসা (ঔষধ ও মনোসামাজিক চিকিৎসা) অত্যাবশক তার বিজ্ঞানভিত্তিক (Evidence Based) দিক নির্দেশনা রয়েছে। সস্তা জনপ্রিয়তা পাওয়ার জন্য যার যে বিষয়ে জ্ঞান নেই তার সে বিষয়ে বলা অনৈতিক।

জটিল ও তীব্র মানসিক রোগ যেমন স্কিটজোফ্রিনিয়া, ম্যানিয়া ও অন্যান্য সাইকোটিক ডিজঅর্ডার (যেখানে রোগীর বাস্তবতার সাথে কোন সংযোগ থাকে না) এবং নিউরোটিক সমস্যা যেমন মাঝারি থেকে তীব্র বিষন্নতা, অবশেসন, শিশুদের অতিচঞ্চলতা (ADHD) প্রভৃতি বিভিন্ন মানসিক রোগ চিকিৎসায় ঔষধের কোন বিকল্প নেই । কারণ এ সব রোগে মস্তিস্কের বিভিন্ন রাসায়নিকের (Neurotransmitter) পরিবর্তন ঘটে যা ঔষধ ব্যতীত মনোসামাজিক চিকিৎসায় পরিবর্তন সম্ভব নয়। কিন্তু গবেষণায় দেখা যায়, সাধারণ জনগণ এসব মানসিক রোগে ঔষদের চেয়ে মনোসামজিক চিকিৎসাকে বেশি প্রয়োজনীয় ভাবেন ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা ও নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে। জার্মানীর এক গবেষণায় দেখা গেছে, স্কিটজোফ্রিনিয়া নামক জটিল মানসিক রোগে শতকরা ৭৬ ভাগ লোক সাইকোথেরাপিকে এবং মাত্র ৮ ভাগ ঔষধকে প্রথম পছন্দ হিসেবে বিবেচনা করেন। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী পুনবার্সনমূলক চিকিৎসা ব্যতীত এ রোগ চিকিৎসায় মনোসামাজিক চিকিৎসার কোন ভূমিকা নেই।

মানসিক রোগের কারণ সম্পর্কে বিজ্ঞানভিত্তিক জ্ঞানের অভাব মানসিক রোগ চিকিৎসার প্রতি জনগণের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করে থাকে। বেশির ভাগের ধারণা শুধু মানসিক ও পরিবেশগত চাপ মানসিক রোগের জন্য দায়ী । এজন্য রোগীরা প্রায়ই এসে জোর দিয়ে বলেন, “আমি আমার মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব, আমার চিকিৎসার প্রয়োজন নেই”। কিন্তু মন আসলে কী? সরলভাবে বলতে গেলে মস্তিস্ক বা ব্রেইনের কার্যকলাপ ছাড়া তো আর কিছু নয়। সেই ব্রেইনের কার্যকলাপ যদি জৈবিক বা বায়োলজিক্যাল কারণ যেমন বংশগতি বা জিনগত কারণ, মস্তিস্কের গঠন ও রাসায়নিকের তারতম্য, মস্তিস্ক ও হরমোনজনিত সমস্যা, বিকাশজনিত ত্রুটি প্রভৃতি হয়ে থাকে তাহলে ব্যক্তি বিনা চিকিৎসায় কীভাবে এর সমাধান করবে? গবেষণায় দেখা যায়, যারা মানসিক রোগকে ব্রেইন বা মস্কিস্কের রোগ হিসেবে বিবেচনা করেন তারা সহজে মানসিক রোগ চিকিৎসায় ঔষধ গ্রহণে আগ্রহী হয়ে থাকেন।

আমাদের দেশে মানসিক রোগের চিকিৎসা বিষয়ে জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কিত জাতীয় তথ্যের ঘাটতি রয়েছে। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতায় সারাদেশে প্রাপ্ত বয়স্ক জনগণের উপর পরিচালিত এক জরিপে জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে বিচিত্র তথ্য পাওয়া যায়। এদেশের শতকরা ৫৫.৪ জন জীন ভূতের আছর অথবা যাদুটোনাকে (Black magic or Evil spirit ) মানসিক রোগের অন্যতম কারণ মনে করেন। “মানসিক রোগ চিকিৎসায় কোন ধরনের চিকিৎসাকে উপযুক্ত মনে করেন?” এ প্রশ্নে শতকরা ৫৫.৬ জন ধর্মীয় চিকিৎসার পক্ষে মত দেন । এ তথ্য বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় উত্তর দাতারা হয়তো তাৎক্ষণিকভাবে তাদের যা মনে আসছিল তা বলেছেন অথবা তাদের এ বিষয়ে কোন স্পষ্ট ধারণা নেই। বর্তমানে মানসিক রোগ চিকিৎসায় কমিউনিটি ভিত্তিক আধুনিক চিকিৎসা পদ্বাতি (Community Based Psychiatric Treatment) সবচেয়ে কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি। শুধুমাত্র বিশেষ প্রয়োজনে নির্দিষ্ট মেয়াদে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে তারপর রোগী নিজ পরিবার ও সমাজে সাধারণ নাগরিকের মত বসবাস করবেন এবং তার এলাকায় অবস্থিত চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা নেবেন। এজন্য সম্প্রতি মানসিক স্বাস্থ্য সেবাকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচীতে অন্তর্ভূক্তকরণের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাথে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকার একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ নীতি বাস্তবায়িত হলে জনগণ তৃণমূল পর্য়ায়ের সরকারী স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র হতে সহজে ও সুলভে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পাবেন । এতে সামাজিক ভীতি ও লোকলজ্জার সমস্যাও দূর হবে ।

চিকিৎসক ও চিকিৎসা শিক্ষানবিসদের মধ্যেও মানসিক রোগ ও এর চিকিৎসা নিয়ে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যায়। অনেকসময় চিকিৎসকগণ মনোচিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই না বুঝে মানসিক রোগের ঔষধ বন্ধ করে দেন । এতে উক্ত রোগীর মানসিক ও শারীরিক উভয় রোগের চিকিৎসা জটিলতা বৃদ্ধি পায়। যেমন, ডায়াবেটিস রোগীর বিষন্নতা থাকলে তার চিকিৎসা না হলে বিষন্নতার কারণে তার ডায়াবেটিস চিকিৎসার প্রতি অনীহা, খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়াম কর্মসূচী ব্যাহত হয় এবং এতে রক্তের সুগার অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে। আবার অনেকের ধারণা শিশুদের মানসিক রোগের ঔষধ মস্তিস্কের ক্ষতি সাধন করে। তাহলে তো শিশুর স্নায়ুরোগ চিকিৎসায় ব্যবহৃত সকল ঔষধের ব্যবহার বন্ধ রাখতে হয় কারণ এসব ঔষধ পুরোপুরি শিশুর ব্রেইনের উপর কাজ করে। কিন্তু তা কি বাস্তবসম্মত ? চিকিৎসা শিক্ষানবিসদের উপর এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র শতকরা ৪০ জন মনে করে শিশু মানসিক রোগে ঔষধ ব্যবহার করা যায়। গতবছর ২ এপ্রিল বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসে ঢাকা মেডিকেল কলেজ গ্যালারীতে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে শ্রদ্ধেয় একজন অধ্যাপক ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ তার বক্তৃতা শুরু করেন এভাবে “ পাগল হচ্ছে দুই প্রকার- বড় পাগল ও ছোট পাগল (তিনি অটিস্টিক শিশুকে বোঝাচ্ছেন); বড় পাগলের চিকিৎসা সহজ, কিন্তু ছোট পাগলের কঠিন”। আমি তো তার কথা শুনে হতভম্ব ! এই হচ্ছে মানসিক রোগের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির নমুনা। আর অটিজম মানসিক রোগ না– এ বিষয়ে তাদের প্রচার ক্লান্তিহীন। এতে অটিস্টিক শিশুর কী উপকার হচ্ছে তা আমার বোধগম্য নয়। কিন্তু এটুকু বুঝি মানসিক রোগ হওয়াটা যে একটি সামাজিক কলঙ্ক- এ বর্বর চিন্তা-ভাবনা থেকে তাদের মত তথাকথিত উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তিরাও বেড়িয়ে আসতে পারেননি। সবচেয়ে মজার বিষয় অটিজম নির্ণয়ের যে বৈজ্ঞানিক মানদন্ড তা অ্যামেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন এর তৈরি করা মানসিক রোগের শ্রেণীবিন্যাস (DSM-IV TR) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আন্তর্জাতিক রোগের শ্রেণীবিন্যাসের (ICD-10) মানসিক রোগ শ্রেণীর অর্ন্তভূক্ত। যদিও অটিজম একটি স্নায়বিক বিকাশজনিত সমস্যা (Neurodevolpmental), তাদের শিশু মানসিকরোগ হওয়ার সম্ভাবনা অন্য শিশুদের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। এ জন্য তাদের মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের সহায়তার প্রয়োজন হয় একথা সবাই জানেন বিশেষত অভিবাবকগণ যারা ভুক্তভোগী।

মানসিক রোগ চিকিৎসায় অন্যতম জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা পদ্ধতির নাম ইলেকট্রোকনভালসিভ থেরাপী (ECT) যা তথাকথিত ‘শকথেরাপি’ নামে অধিক পরিচিত । মহিলাদের প্রসবোত্তর জটিল মানসিক রোগ, আত্মহত্যা ও হত্যার প্রবণতা , তীব্র বিষন্নতা যেখানে ঔষধ থেকে দ্রত ফল পাওয়া যাচ্ছে না, রোগীর আহার বন্ধ হওয়া ও নিথর হয়ে যাওয়া, স্কিটজোফ্রিনিয়া, ম্যানিয়া প্রভৃতি রোগের কারণে সংকটাপন্ন অবস্থায় এ চিকিৎসা অত্যন্ত দ্রুত ও কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি। কিন্তু, এ চিকিৎসা সম্পর্কে জনগণের বিভ্রান্তি প্রবাদতুল্য। সুচিত্রা সেন অভিনীত ‘দীপ জ্বেলে যাই’ ছবির ভূত একবিংশ শতকে এসেও আমাদের মাথা থেকে নামেনি। জনগণের মাঝে এ চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে রয়েছে ভয় ও আতংক। কিন্তু বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এর কার্যকারিতা, মানবদেহে সহনীয়তা ও নিরাপদ ব্যবহারের সফল প্রমাণ পাওয়া যায়। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নির্ভর করে এক থেকে দুই মিনিটের অবেদন (Anesthesia) প্রক্রিয়ার উপর । অথচ আমাদের দেশে প্রতিদিন এক ঘন্টা অথবা তার অধিক সময় অবেদন করে কয়েক হাজার অপারেশন হচ্ছে যা নিয়ে খুব একটা উদ্বেগ লক্ষ্য করা যায়না। সমস্যার কারণ সঠিক তথ্যের অভাব ও নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। মনোসামাজিক চিকিৎসা সম্পর্কে জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি তুলনামূলকভাবে ইতিবাচক। উদ্বেগ, আতংক, ভীতি ও মনোদৈহিক মানসিক সমস্যায় এ ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি বেশ ফলপ্রসূ। তবে একটা বিষয় অবশ্যই সতর্কতার সাথে খেয়াল রাখতে হবে যে, চিকিৎসা পদ্ধতি নির্বাচনে বিজ্ঞানভিত্তিক দিকনির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। অন্যথায় উপকারের চেয়ে ক্ষতি হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

মানসিক রোগ সম্পর্কে মিডিয়ার আগ্রহ বর্তমান সময়ে যে কোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। বিগত বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসে (১০ অক্টোবর) প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রচার তার প্রমাণ যা উৎসাহব্যঞ্জক। কিন্ত প্রায়ই শেকল বাধা মানসিক রোগীর ছবি ও রোগীর অসংলগ্ন কথাবার্তা প্রচারে অতিউৎসাহ দেখা যায়। এ ধরনের রোগীর চিকিৎসার পর সুস্থ স্বাভাবিক হয়ে ঘরে ফেরার দৃশ্য প্রচার করতে খুব একটা দেখা যায়না। টিভি নাটকেও এ বিষয়গুলি প্রায়ই বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয় যা নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিকে উৎসাহিত করে। একজন জনপ্রিয় বিজ্ঞাপন নির্মাতা ও পরিচালকের নাটকে আমরা দেখি কীভাবে মফস্বল শহর থেকে স্বামীকে খুঁজতে আসা একজন ভদ্রমহিলা একটা ফোন করতে এসে নাম বিভ্রাটে জোরপূর্বক একটি প্রাইভেট মানসিক ক্লিনিকে ভর্তি হয়। এর পর দেখি অন্যান্য মানসিক রোগীর অস্বাভাবিক আচরণের দৃশ্য এবং এসব রোগীর সংস্পর্শে আসার পর এ ভদ্রমহিলার মধ্যে অনুরূপ জটিল ধরনের মানসিক রোগের লক্ষণ প্রকাশ যেমন, হ্যালুশিনেশন (Hallucination) । আষাঢ়ে গল্পেরও একটা সীমা থাকে। মানসিক রোগ কোন ভাইরাস সংক্রমণের মত ছোঁয়াচে রোগ নয় যে রোগীর সংষ্পর্শে আসলে তারও এ ধরনের মানসিক সমস্যা হবে। কতটা নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি আর অজ্ঞতা থাকলে নাটকটির পরিচালকের মাথায় এ ধরনের ভাবনা আসে তা সহজেই বোঝা যায় । এ ধরনের টিভি নাটক দর্শকদের মাঝে মানসিক রোগ ও এর চিকিৎসা সম্পর্কে কী বার্তা দেবে তা সহজেই অনুমেয়।

বর্তমানে আধুনিক মানসিক রোগ চিকিৎসা গ্রহণের পথে সবচেয়ে বড় বাধা জনগণের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো প্রত্যাশিত মাত্রায় পৌঁছেনি। আর দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের কাজ খুব একটা সহজ নয়। এজন্য প্রয়োজন মানসিক রোগ ও এর চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে জনসচেতনা তৈরি করা । প্রতি বছর ১০ অক্টোবর ঘটা করে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালন তার একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস। এজন্য আমাদের দেশে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে এ্যাডভোকেসি গ্রুপ সৃষ্টি করা প্রয়োজন যেখানে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ, মনোবিদসহ সমাজের সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণ থাকবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় কোন ব্যক্তি মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে দুএকটা গোলটেবিল বৈঠক, টিভি টক শো কিংবা জাতীয় দৈনিকে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেই নিজেকে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার সোল এজেন্ট ভাবতে শুরু করেন যেখানে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ও মনোবিদের কোন প্রতিনিধিত্ব থাকেনা । এজন্যই এ ধরণের সংগঠন জনগণের নিকটও গ্রহণযোগ্যতা পায়না। আর মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞগণ মনে করেণ রোগী দেখেই তাদের দায়িত্ব শেষ। তাদের এ ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে সামাজিক দায়বদ্ধতার কথাও মনে রাখতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্য সেবাদানকারী পেশাজীবি ও জনগণের মধ্যে আরও যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে মুক্ত আলোচনা ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। স্কুল কারিকুলামে বিষয়টির অর্ন্তভুক্তকরণের কাজ প্রক্রিয়াধীন। মেডিকেল শিক্ষা ব্যবস্থায় বিষয়টি আরও বিশদভাবে ও গুরুত্বসহকারে অর্ন্তভুক্ত করে শিক্ষাগত ও পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য আরও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। পরিশেষে, মানসিক রোগ চিকিৎসায় জনগণের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, স্বাস্থ্যশিক্ষা ও যোগাযোগ বাড়ানো অতি জরুরী। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণায় দেখা যায়, আমাদের দেশে প্রাপ্তবয়স্ক জনগণের শতকর ১৬ ভাগ ও শিশুকিশোরদের শতকরা ১৮ ভাগ যেকোন ধরনের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে। বিশাল এ জনগোষ্ঠীর মানসিক স্বাস্থ্যকে বাদ দিয়ে জাতীয় অগ্রগতি সম্ভব নয়। তাই মানসিক রোগ চিকিৎসায় নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পরিহার করে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে সকলের সহযোগিতা কাম্য।

ঔষধ পেতে যোগাযোগ করুন :

 হাকীম মিজানুর রহমান (ডিইউএমএস)

(শতভাগ বিশ্বস্ত ও প্রতারণামুক্ত অনলাইন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান)

ইবনে সিনা হেলথ কেয়ার

হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর।

যোগাযোগ করুন : (সকাল ১০টা থেকে রাত ০৮ টা (নামাজের সময় ব্যতীত)

+88 01762240650, +88 01834880825

+88 01777988889 (Imo-whatsApp)

শ্বেতী রোগ, যৌন রোগ, ডায়াবেটিস,অশ্ব (গেজ, পাইলস, ফিস্টুলা),ব্লকেজ, শ্বেতপ্রদর, রক্তপ্রদর , আলসার, টিউমার, বাত-ব্যথা, দাউদ-একজিমা ইত্যাদি রোগের চিকিৎসা দেয়া হয়।

Loading

শেয়ার করুন

Leave a Reply