শ্বেতী রোগ কেন হয়? শ্বেতীর প্রতিকার জেনে নিন

শ্বেতী রোগ নিয়ে সমাজে বিভিন্ন রকম নেতিবাচক ভাবনা রয়েছে। তবে শ্বেতী কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। নিয়মিত চিকিৎসায় এই রোগ বহুলাংশে ভালো হয়। এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. হাকীম মিজানুর রহমান।

প্রশ্ন : শ্বেতি শব্দটি সাদা থেকে এসেছে। কমবেশি সবাই জানেন এই রোগে শরীরের বিশেষ বিশেষ অংশ সাদা হয়ে যায়। এটি হয় কেন?

উত্তর : ত্বক সাদা হয়ে যাওয়ার অনেকগুলো কারণ আছে। এর মধ্যে শ্বেতি একটা। তবে সব সময় সাদা হয়ে যাওয়ার মানে শ্বেতি নয়। আরো অন্যান্য কারণে হতে পারে। যেমন : সাধারণ একটা ফাঙ্গাল ইনফেকশন, যাকে সৈদ বলে অনেকে। এর কারণেও সাদা হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া দেখা যায় যাদের এলার্জি আছে, এর থেকে কখনো কখনো গায়ে ছোপ ছোপ হয়ে যায়। সেটিও শ্বেতি নয়। একেও আমরা সহজে চিকিৎসা করতে পারি।

আর শ্বেতি হলো আমাদের দেহে যে রং তৈরি করে মেলালিন, আমাদের রং যে কালো এটা তৈরি করার জন্য শরীরে মেলানোসাইট নামে একটি কোষ আছে, এই কোষগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ওই রং কোষগুলোকে চিনতে পারে না। মনে করে সে বাইরের কেউ। তখন রোগ প্রতিরোধক্ষমতাগুলো একে ধ্বংস করে দেয়। তখন ওই জায়গায় রং তৈরি করতে পারে না কোষগুলো। ধীরে ধীরে সাদা হয়ে যায়।

প্রশ্ন : এই রোগ চিকিৎসা করে প্রতিরোধ করা বা ভালো করে দেওয়া কি সম্ভব?

উত্তর : আমরা আসলে সেই চেষ্টাটাই করি। এটা সম্ভব। যেসব কারণে এটা হয়, শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা যে এটার পেছনে লেগে গেছে। এ ছাড়া আরো কিছু বিষয় আছে এটার। আমরা বলি অক্সিডিসিভ স্ট্রেস। আমাদের শরীরের বিভিন্ন মেটাবোলিজম, এখান থেকে অনেকগুলো ফ্রি রেডিক্যাল তৈরি হয়। এগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিয়ে যদি থামাতে পারি, তাহলে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় রংটা ফিরে আসে।

প্রশ্ন : শ্বেতী রোগ কি স্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়?

উত্তর : শ্বেতী রোগ ছোঁয়াচে না। সারা দিন যদি কেউ ধরে রাখে, তাহলেও ছড়াবে না। তবে কিছুটা জেনেটিক বিষয় আছে। পরিবারের কারো কারো হতে পারে। কিন্তু এটা কোনোভাবেই ছোঁয়াচে না।

প্রশ্ন : এই রোগ কি সমস্ত শরীরের বেশি হয়, নাকি কোনো কোনো অংশে বেশি হয়?

উত্তর : এর অনেক ভিন্নতা আছে। কারো কারো ক্ষেত্রে হয়তো শুধু একটা জায়গায় হচ্ছে। আবার হয়তো অনেক জায়গায় হচ্ছে। আঙুলে যেটা হয়, একে বলি একরাল ভিডিলিগো। এটা খুব পাজি রকমের। এটার চিকিৎসা করা কঠিন। যেসব জায়গায় লোম নেই, সেসব জায়গায় যখন শ্বেতি বেশি হয় তখন এর রং ফিরিয়ে আনা খুব কঠিন হয়। তবে যেসব জায়গায় লোম আছে সেখানে শ্বেতি হলে আমরা রংটা ফিরিয়ে আনতে পারি।

প্রশ্ন : শ্বেতি হলে এর চিকিৎসার জন্য সাধারণত কী করে থাকেন? এর চিকিৎসা কি দীর্ঘ মেয়াদি করতে হয়?

উত্তর : আমরা যেটা বলছিলাম কী কী কারণে শ্বেতি হয়, যেমন- রোগ প্রতিরোধক্ষমতার জন্য সে সমস্যা হয় তার কিছু ওষুধ আছে। যেমন-রিক্যাপ ক্রিম, ভিটিলিগো ন্যাচারাল সিরাপ, ভিটিলিগো কিউর অয়েল, ভিটিলিগো হার্বস ট্যাবলেট। এগুলো অতি দামী।  এগুলো নিয়মিত ব্যবহার করলে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যেই শ্বেতী রোগ আরোগ্য হয়।

আরেকটি বলছিলাম অক্সিডিসিভ স্ট্রেস। এটি হলে তার চিকিৎসা করতে হবে। আবার কিছু কিছু কেমিকেল আছে। আমরা সেটাকে বলি লিকো ডার্মা, আরেকটাকে বলি ভিটিলিগো। কেমিকেলের কারণে কিছু শ্বেতী রোগ হতে পারে। এসব জায়গায় প্রতিরক্ষার প্রয়োজন আছে। কী কারণে রোগটি হচ্ছে সেটা নির্ণয় করে সারিয়ে দিতে চেষ্টা করি। এভাবেই আমরা শ্বেতী রোগীর চিকিৎসা করি।

প্রশ্ন : এক্ষেত্রে কি পদ্ধতিগত চিকিৎসায় যান না কেবল ক্রিম, অয়েন্টমেন্ট দিয়ে ট্রপিক্যাল এগুলো দিয়ে চিকিৎসা করা হয়?

উত্তর : আমরা প্রথমে পরীক্ষা করে দেখি এটি কি চুপ করে বসে আছে, নাকি বাড়ছে। যদি বাড়ে, তাহলে পদ্ধতিগত চিকিৎসায় চলে যাই। এর মধ্যে একটি চিকিৎসা আছে স্টেরয়েড। এটাকে আমরা কিছুদিনের জন্য দিয়ে থাকি। এটার জন্য ডোজ রয়েছে। আরেকটি বিষয় রয়েছে ফটোথেরাপি। আগে আমরা এক ধরনের ওষুধ গায়ে লাগিয়ে দিতাম, তারপর গায়ে রোদ লাগাতে বলতাম। এই রোদ কালো হওয়ার প্রবণতা বাড়িয়ে দেবে। এরপর আরেকটি পদ্ধতি হলো সূর্যের মধ্যে যে আল্ট্রাভায়োলেট-রে, যেটা কালো করে, এর জন্য একটা মেশিন তৈরি হলো। এখন এসেছে ন্যারো বেনইউভিবি, এটাতে ওষুধ খেতেও হয় না। লাগাতেও হয় না। এর অনেক ভালো ফলাফল রয়েছে। এগুলো হলো পদ্ধতিগত ভালো চিকিৎসা। তবে এতে ব্যয়ভার বেশি হওয়ায় সবার পক্ষে এই চিকিৎসা গ্রহণ সম্ভব হয় না।

ট্রপিক্যালের চিকিৎসা পদ্ধতিতে কিছু ভালো ওষুধ এসেছে। এসবের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক কম। এগুলো ব্যবহার করেও অনেকে ভালো হয়। তবে এটা প্রথমেই বলা যাবে না আপনাকে ভালো করে দিতে পারব। অনেকেই ভালো হয়। আবার অনেকের ক্ষেত্রে আবার বিষয়টা ফিরে ফিরে আসতে পারে। তখন চিকিৎসকের কাছে পুনরায় গিয়ে চিকিৎসা করতে হয়। এভাবেই একজন শ্বেতি রোগীকে ভালো রাখি। এর জন্য একজন শ্বেতী রোগীকে চিকিৎসকের সাথে সার্বক্ষণিক তার অবস্থা সম্পর্কে রিপোর্ট প্রদানে তৎপর থাকতে হবে।

শ্বেতীর চিকিৎসায় সেরে উঠার জন্য রোগীকে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করতে হয়। দেহের লোমশ অংশের চিকিৎসা অনেক ক্ষেত্রেই সফল হয় কিন্তু যেসব অংশে লোম থাকে না, যেমন আঙুল, ঠোঁট ইত্যাদির চিকিৎসায় দীর্ঘসময় লেগে যেতে পারে। আবার অনেক ক্ষেত্রে রোগী নিজে নিজেই সেরে যেতে পারে।

সঠিক চিকিৎসার ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মলম, ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। সবার ক্ষেত্রে সব চিকিৎসা পদ্ধতি একরকম ফল দেয় না। চিকিৎসা পদ্ধতি বাছাই করার ক্ষেত্রে রোগীর বয়স, রোগের স্থান এবং ব্যাপ্তি দেখে নির্ধারণ করা হয়। শ্বেতী চিকিৎসার জন্য যে সব ওষুধ ব্যবহার করা হয় তা বাংলাদেশে পাওয়া যায়।

প্রয়োজনে রোগীর বয়স, রোগের সময়কাল, রোগের স্থান এবং ব্যাপ্তিভেদে চিকিৎসা পদ্ধতি বাছাই করা হয়। সেক্ষেত্রে এ রোগ হলে প্রাথমিক অবস্থায়  Recap ক্রিম, Vitiligo Natural, Vitiligo Natural Harbs সহ আপনার শ্বেতী অবস্থা অনুসারে ডাক্তার নির্দেশনামতে আরো কিছু ঔষধ নিয়মিতভাবে সেবন করতে হয়। এ চিকিৎসায় ধীরে ধীরে শ্বেতী থেকে আরোগ্য লাভ করা সম্ভব এবং সারাদেশে প্রায় এক হাজারেরও বেশি রোগী আরোগ্য লাভ করেছেন।

শ্বেতী রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে নিজে সরাসরি গিয়ে ঔষধ গ্রহণ করতে পারলে তা হবে পারফেক্ট। তবে যদি কোনো কারণে তা সম্ভব না হয় তবে বাংলাদেশের যে কোনো জেলায় কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমেও দু’ থেকে তিন দিনের মধ্যেই ঔষধ গ্রহণ করতে পারবেন। 

শ্বেতী রোগের ফলে যেসব সমস্যা হতে পারে
শ্বেতী রোগের ফলে শুধু স্কিনের স্বাভাবিক বর্ণ নষ্ট হয় কিন্তু এতে স্বাস্থ্যের অন্য কোন ক্ষতি হয়না। এই রোগে মৃত্যুঝুঁকিও নেই। তবে রোগী সাধারণভাবে রোদ বা আগুনের তাপ সহ্য করতে পারে না। এ রোগ হলে প্রথমে ছোট ছোট সাদা দাগ দেখা যায় এবং পরবর্তীতে দাগগুলো মিলে বৃহদাকার ধারণ করে। কখনো কখনো মায়ের গর্ভ থেকেও শিশু এ রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে পারে। সমাজে এ রোগ নিয়ে অনেক ভুল ধারনা এবং কুসংস্কার প্রচলিত আছে। তাই অনেক ক্ষেত্রেই এ রোগে রোগীকে প্রচন্ড মানসিক সমস্যায় পড়তে হয়।

সবশেষে
শ্বেতী রোগে ত্বকের বিভিন্ন জায়গা সাদা হয়ে যায়। এটি কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়। এই রোগে শরীরে তেমন কোনো সমস্যা না হলেও রোগীকে সামাজিক ক্ষেত্রে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। যেমন- পরিচিত মানুষ বাদ দিয়ে, কোনো জায়গায় গেলে তাঁকে একটা হলেও এ বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। এই প্রশ্নের ভয়ে অনেকে নিজেকে গুটিয়ে ফেলেন। আবার বিয়েশাদীর ক্ষেত্রেও নানা সমস্যা হয়। অনেকেই ধবল রোগীর সঙ্গে হাত মেলাতে চান না, কোলাকুলি করতে চান না বা বিয়ে দিতে চান না এই পরিবারে। আবার অনেকে ধবল বা শ্বেতী রোগকে কুষ্ঠ রোগ মনে করেন। যদিও এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারনা। এই রোগের বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে।

করণীয় :

কোষ্ঠকাঠিন্য দোষ থাকলে দূর করতে হবে। দুধ, ছানা, মাখন, স্নেহজাতীয়, ফলের রস ও অন্যান্য পুষ্টিকর খাদ্য বেশি বেশি খাবেন। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা ভালো।

যা বেশি বেশি খাবেন :

খুরমা খেজুর, সবুজ মটরশুটি, শালগম, পালং শাক, এপ্রিকট, মেথি, ডুমুর, সবুজ শাকশবজি, আম, পেয়াজ, পেস্তা, আলু, পিউর ঘি, মুলা, লাল মরিচ, শাকসবজি, আখরোট, গম

যা একদম খাবেন না :

জাম, অরেঞ্জ, ব্লু বেরিজ, অ্যালকোহল, মাখন, কাজুবাদাম, চকোলেট, সামুদ্রিক মাছ, রসুন, আঙ্গুর, পেয়ারা, লেবু, সামুদ্রিক তৈলজাত খাবার, পেপে, নাশপাতি, বরই, গরুর গোস্ত,  সোডা জাতীয় যে কোনো কোমল পানীয় (যেমন পেপসি, কোকাকোলা, সেভেন আপ ইত্যাদি) , টমেটো, তরমুজ। ধূমপান, এলকোহল সেবন, উগ্রমশলাযুক্ত খাবার বর্জনীয়।

লাইফস্টাইল সম্পর্কিত :

টাইট ফিটিং, যা ত্বকে দাগ দিতে, মত স্থিতিস্থাপক অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে যা ত্বক রক্তসংবহন সমস্যার সৃষ্টি করে। প্রারম্ভিক, চুলকানি অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে। কোন আঘাত নতুন প্যাচ বৃদ্ধি দিতে হবে। প্লাস্টিক ও রাবার পরিধান এড়িয়ে চলা উচিত। প্লাস্টিক অলঙ্কার, Bindi বা ত্বকে কোন স্টিকার এড়িয়ে চলা উচিত।

অনুগ্রহ করে লক্ষ্য করুন যে, এই খাদ্য নিষেধাজ্ঞা বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক কারণে এবং vitiligo সম্পর্ক আমাদের অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে করা হয়। এই খাদ্য নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র আমাদের চিকিৎসার স্বার্থে । চিকিৎসা শেষ হলে আবার তা নিয়মিত খেতে পারবেন।

সারাদেশে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বিশ্বস্ততার সাথে ঔষধ ডেলিভারী দেওয়া হয়।

ঔষধ পেতে যোগাযোগ করুন :

হাকীম ডা. মিজানুর রহমান

(বিএসএস, ডিইউএমএস)

হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর।

ইবনে সিনা হেলথ কেয়ার

একটি বিশ্বস্ত অনলাইন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান।

চিকিৎসকের মুঠোফোন : 

01762240650

( ইমো, হোয়াটস অ্যাপ)

ই-মেইল : ibnsinahealthcare@gmail.com

সারাদেশে কুরিয়ার সার্ভিসে ঔষধ পাঠানো হয়।

শ্বেতীরোগ একজিমাযৌনরোগ, পাইলস (ফিস্টুলা) ও ডায়াবেটিসের চিকিৎসক।

আরো পড়ুন : শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা

আরো পড়ুন : মেহ-প্রমেহ ও প্রস্রাবে ক্ষয় রোগের প্রতিকার

আরো পড়ুন : অর্শ গেজ পাইলস বা ফিস্টুলা রোগের চিকিৎসা

আরো পড়ুন : ডায়াবেটিস প্রতিকারে শক্তিশালী ভেষজ ঔষধ

আরো পড়ুন : যৌন রোগের শতভাগ কার্যকরী ঔষধ

আরো পড়ুন :  নারী-পুরুষের যৌন দুর্বলতা এবং চিকিৎসা

আরো পড়ুন : দীর্ঘস্থায়ী সহবাস করার উপায়

আরও পড়ুন: বীর্যমনি ফল বা মিরছিদানার উপকারিতা

Loading

শেয়ার করুন

Leave a Reply