চাঁদপুরের মাদ্রাসায় শুনে শুনে কোরআন মুখস্ত করলেন শরীয়তপুরের অন্ধ সাজ্জাতুল
চাঁদপুর রিপোর্ট ডেস্ক :
শুনে শুনে কোরআন মুখস্ত করেছেন হাফেজ সাজ্জাতুল ইসলাম (১৮)। শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার আলাওয়ালপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মৃত জবেদ আলী মাল ও সায়েদা বেগমের ছোট ছেলে সাজ্জাতুল। তারা চার ভাই, চার বোন।
বাহ্যিক দৃষ্টি নেই তার। কিন্তু অন্তরদৃষ্টি তার প্রখর। জন্ম হওয়ার পাঁচ বছর পরই সাজ্জাতুল চোখের দৃষ্টি হারান। দেখতে পাচ্ছেন না দুচোখেই। চোখে দেখতে না পেলেও মাদরাসার মাওলানার কাছ থেকে শুনে শুনে মুখস্ত করেছেন পবিত্র কোরআন শরীফ।
কথা হয় হাফেজ সাজ্জাতুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, তার বয়স যখন পাঁচ বছর তখন শরীরে হাম ওঠে। হামে তার দু’চোখের দৃষ্টি হারিয়ে যায়। ৮ বছর বয়সে চাঁদপুর নেছারিয়া আরাবিয়া হাফিজিয়া মাদরাসায় হেফজ খানায় ভর্তি হন তিনি। মাদারাসার শিক্ষক হাফেজ মাওলানা আব্দুর রহমানের মুখে শুনে শুনে দুই বছরেই কোরআন মুখস্ত করেছেন তিনি। পরে চট্টগ্রাম জামিয়া আহমদিয়া কামেল মাদরাসায় মিজান কিতাব শেষ করেন।
সাজ্জাতুল আরও জানান, তিনি ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে শরীয়তপুর জেলার আংগারিয়া সমন্বিত অন্ধ শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় আংগারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণিতে ভর্তি হন। তিনি সরকারি খরচে সেখানে পড়ালেখা করছেন।
তিনি আরও জানান, অন্যের ঘাড়ে বোঝা হয়ে না থেকে স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য শুরু করেছেন পড়ালেখা। বড় হয়ে প্রতিবন্ধীদের শিক্ষক হতে চান তিনি। দাঁড়াতে চায় তাদের পাশে।
আংগারিয়া সমন্বিত অন্ধ শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় সমাজসেবা অধিদফতরের রির্সোস টিচার মো. এনামুল হক বলেন, আমরা প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের লেখাপড়া করিয়ে থাকি। সাজ্জাতুল এ বছর ৮ম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। তবে ছাত্র হিসেবে খুবই ভালো সাজ্জাতুল।
ইচ্ছা ও মনোবল থাকলে প্রতিবন্ধী হয়েও অনেক কিছু করা যায়। সাজ্জাতুল তার বড় প্রমাণ।
প্রকাশিত : ১৩ আগস্ট ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার
চাঁদপুর রিপোর্ট : এমআরআর/
101 সর্বমোট পড়েছেন, 1 আজ পড়েছেন