গোপালগঞ্জের শীলাকে চাঁদপুর এনে হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন : গ্রেপ্তার ২

নিজস্ব প্রতিবেদক  :
চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদীতে চাঞ্চল্যকর গোপালগঞ্জের গৃহবধূ শীলা খানম হত্যার ২ আসামীকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় বিষয়টি সংবাদ সম্মেলন করে নিশ্চিত করেছেন চাঁদপুর পিবিআই পুলিশ সুপার মোঃ মোস্তফা কামাল রাশেদ। আটককৃতরা হলেন চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড উত্তর মৈশাদী গ্রামের মজুমদার বাড়ির আজিজ মজুমদারের ছেলে রাজিব মজুমদার (২১) ও আশিকাটি ইউনিয়নের হাপানিয়া গ্রামের মৃত স্বপন খানের ছেলে কামরুল হাসান হৃদয় (২২)।

পিবিআই পুলিশ সুপার জানান, আসামী রাজিব মজুমদার গোপালগঞ্জের একটি কসমেটিকস দোকানে চাকরি করতেন। একই মার্কেটে আরেকটি কসমেটিকস দোকানে শীলা খানমও চাকরি করতেন। সেই সুবাদে তাদের মধ্যে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আট মাস সম্পর্কের মাঝে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কও হয়েছে। তাদের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি মার্কেটের সকলের মাঝে জানাজানি হলে একপর্যায়ে তাদেরকে বের করে দেয়া হয়।

পরে শীলা খানম রাজিবকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে তারা দুজনে গোপালগঞ্জ পুলিশ লাইন্সের সামনে থেকে গাড়িতে করে ঢাকায় এসে চাঁদপুরগামী ময়ুর লঞ্চযোগে রাত ১টায় চাঁদপুর এসে পৌঁছায়। এর মধ্যে লঞ্চের কেবিনে তাদের মাঝে দৈহিক সম্পর্ক হয়েছে।

পরে সিএনজি নিয়ে রাজিবের গ্রামের বাড়ি মৈশাদীতে এসে তার বন্ধু রফিককে ফোন করে এনে পুরো ঘটনাটি খুলে বলে শীলা খানমকে হত্যা করার বিষয়টি জানালে রফিক তাদের আরেক বন্ধু হৃদয়কে আনতে বলেন। পরে হৃদয় এলে তারা তিনজনে মিলে আদুর খান স্কুলের পাশে একটি জঙ্গলে শীলা খানমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পলাশ পাটওয়ারীর বাগানের ঝোঁপেড় মধ্যে ফেলে রেখে চলে যায় যে যার বাড়িতে।

পরদিন সকালে হত্যাকারীরা তিনজন একত্রিত হয়ে রাজিব ও হৃদয় সারাদিন বাবুরহাট এলাকায় ঘুরাঘুরি করে রাতে হৃদয়ের নানার বাড়ি আশিকাটি ইউনিয়নের দাসদী পাঠান বাড়ি থেকে রাত সাড়ে ১১টায় আটক করা হয়।

গৃহবধূ শীলা খানম হত্যাকন্ডে তার স্বামী বাদী হয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। শীলা খানমের দাম্পত্য জীবনে একটি ৪ বছর বয়সী কন্যা সন্তান রয়েছে। এবং রাজিব মজুমদারও বিবাহিত ছিলেন। এদিকে গত ৮ সেপ্টেম্বর সকালে উত্তর মৈশাদীর পলাশ পাটওয়ারীর বাগানে স্থানীয় এক ব্যাক্তি দূর থেকে শীলা খানমের ব্যাগ দেখতে পেয়ে কাছে গিয়ে তার লাশ দেখতে পান এবং আশপাশের মানুষদের বিষয়টি জানালে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ ও পিবিআই পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। শীলা খানম (২৮) গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার করপাড়া ইউনিয়নের করপাড়া গ্রামের মুনসুর খানের মেয়ে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন, পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ কবির আহমদ, মোঃ আতিকুর রহমান, এম শামীম আহমেদ, উপ পুলিশ পরিদর্শক আমিরুল ইসলাম মীর, এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমির হোসেন মোহাম্মদ আতিকুর রহমান।

Loading

শেয়ার করুন